শুক্রবার, ২৪ নভেম্বর, ২০১৭

প্রশ্ন : লম্বা জামা, জুব্বা, পাজ্ঞাবী, টুপি, পাগড়ি কি সুন্নতি পোশাক?

প্রশ্ন : লম্বা জামা, জুব্বা, পাজ্ঞাবী, টুপি, পাগড়ি কি সুন্নতি পোশাক?

উত্তর : সুন্নতি পোশাক বলতে পোশাকের কোনো নির্দিষ্ট কাটিং সুন্নাহর মধ্যে নেই। সুন্নাহ বলতে আমরা বোঝাচ্ছি, রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর হাদিসের মধ্যে আসেনি। অর্থাৎ রাসূল (সা.)-এর সহিহ হাদিসের মধ্যে পোশাকের সুনির্দিষ্ট কোনো কাটিং রাসূল (সা.) জানিয়ে যাননি।
সুতরাং লম্বা জামা, পাজ্ঞাবী, জুব্বা টুপি, পাগড়ি এই পেশাকগুলো এভাবে রাসূল (সা.)-এর কোনো সহিহ হাদিসের মধ্যে আসেনি। কিন্তু রাসূলুল্লাহ (সা.) পাগড়ি ব্যবহার করেছেন মর্মে সহিহ হাদিস সাব্যস্ত হয়েছে। রাসূলুল্লাহ (সা.) জোব্বা ব্যবহার করেছেন মর্মে সহিহ হাদিস সাব্যস্ত হয়েছে। রাসূলুল্লাহ (সা.) পাগড়ির নিচে টুপির মত কাপড় পরেছেন মর্মে সহিহ হাদিস সাব্যস্ত হয়েছে।

এগুলো রাসূল (সা.) ব্যবহার করেছেন, এটি প্রমাণিত হয়েছে, এটা রাসূল (সা.)-এর কাজ। তাই এই কাজগুলো কী ভাবে ইসলামী শরিয়তের মধ্যে গুরুত্ব দেওয়া হবে, অর্থাৎ প্রকৃত অবস্থানটি কী হবে, এ নিয়ে আলেমদের মধ্যে মতবিরোধ বা মতপার্থক্য রয়েছে। অধিকাংশ আহলুত তাহকিক, মাহকি ওলামায়ে কেরাম বলেছেন, নবী (সা.) যেসব কাজ স্বভাবজাত বা মানুষের প্রকৃতিগত কাজ, সেগুলো সবই মূলত আদতের (অভ্যাস, প্রথা বা প্রচলন) মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। তাই রাসূল (সা.) এই কাজগুলো অভ্যাসের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হবে, এগুলো ইবাদতের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হবে না।
ফলে দেখা গেছে যে এগুলো যদি ইবাদতের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হতো, তাহলে সাহাবায়ে কেরামকে রাসূলুল্লাহ (সা.) এভাবেই পোশাক পরতে বা এভাবে কাজ করতে বলতেন। কিন্তু রাসূল (সা.) এভাবে বলেননি। তাই বোঝা যাচ্ছে যে এগুলো মূলত প্রথাগত প্রচলন বা আদতের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত ছিল। ফলে অধিকাংশ ওলামায়ে কেরামের বক্তব্য এটাই, যে এগুলো মূলত প্রথা বা প্রচলনের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত, এগুলো ইবাদতের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত নয়।
তবে কেউ যদি মাথায় পাগড়ি পরেন অথবা মাথায় টুপি পরেন অথবা বড় জোব্বা পরেন, এই কারণে যে রাসূল (সা.)-এর অনুসরণ করার জন্য, যে রাসূলুল্লাহ (সা.) পরেছেন, প্রমাণিত হয়েছে, সে কারণে, রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর প্রতি ভালোবাসার কারণে, তাহলে অবশ্যই তিনি সওয়াব পাবেন, যেহেতু আল্লাহু সুবহানাহুতায়ালা কোরআনে কারিমের মধ্যে স্পষ্ট করে বলেছেন, ‘আল্লাহর রাসূলের মধ্যে রয়েছে তোমাদের জন্য উত্তম আদর্শ।’
সুতরাং যেহেতু একটা নমুনা, আদর্শ, মডেল আমার সামনে আছে, এই মডেলের অনুসরণের কারণে, আল্লাহর রাসূল (সা.)-এর অনুসরণের কারণে তিনি সওয়াব পাবেন। শুধু ওই পোশাকের কারণে নয় বা পোশাকটাকে সুন্নাত আখ্যায়িত করার জন্য নয়। তাই সুন্নতি পোশাক বলতে যদি কেউ মনে করে থাকেন যে সুনির্দিষ্ট কোনো কাটিংকে, এই কাজটি শুদ্ধ নয়।
তবে রাসূলুল্লাহ (সা.) কোনো পোশাক পরেছেন, এটি প্রমাণিত হলে, যদি কেউ রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর ভালোবাসার কারণে, অনুসরণের কারণে পোশাকটি পরেন, তাহলে তিনি সওয়াব পাবেন, এতেও কোনো সন্দেহ নেই। তবে কেউ যদি মনে করে এসকল পোশাক না পরলে গুনাহ হবে তাহলে তার এই চিন্তা হবে বিতআতী চিন্তা। রাসূল সাঃ যে কাটিং এর পোশাক পরতে বলেন নি সে কাটিং এর পোশাক পরতে বাদ্ধ করা এক প্রকারে বারাবারি।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন